শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৩ ১৪৩১
|| ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০২০
কোরবানির ইদের মাত্র ২২ থেকে ২৩ দিন বাকি। প্রতিবছর এ সময় রাজশাহীর সিটি গরুর হাট জমে উঠলেও এবার এ হাটের ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। খামারি ও ব্যবসায়ীরা হাটে গরু নিয়ে আসলেও দেখা মিলছে না ক্রেতার।
হাতেগোনা কয়েকজন ক্রেতা আসলেও বলছেন না কাক্সিক্ষত দাম। এতে দিন শেষে বিক্রেতারা ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন গরু। গতকাল বুধবার (৮জুলাই) সিটি হাট ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।
ব্যবসায়ী ও খামারিরা বলছেন, করোনায় বর্তমান পরিস্থিতিতে এবার গরু নিয়ে আগে থেকেই শঙ্কা ছিলো। সামনের দিনগুলোতে দাম না পাওয়ার শঙ্কা নিয়ে কোরবানির হাটের শুরুর দিকে গরু হাটে তুলেছেন তারা। কিন্তু বাইরের ব্যবসায়ীরা না আসায় তেমন ক্রেতা মিলছে না। আর যে সব ক্রেতা আসছেন তারাও ন্যায্য দাম বলছেন না।
ব্যবসায়ী আইনাল হক জানান, কোরবানির হাটের এমন দৃশ্য এর আগে দেখেন নি তিনি। বিগত বছরগুলোতে কোরবানির হাটের এ সময় হাক-ডাকে জমজমাট থাকলেও এ বছর হাট জমে উঠছে না। হাটে প্রচুর গরু আছে। কিন্তু ক্রেতা নেই। তিনি কয়েক হাট ঘুরছেন। কিন্তু গরুহাট জমে উঠবে কিনা এ শঙ্কায় আছেন।
গরু বিক্রেতা মইনুদ্দিন জানান, তিনি তার পোষা গরু বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু তার গরুর ন্যায্য দাম কেউ না বলায় ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সামনের দিনে হাটের খোঁজখবর নিয়ে আবার আসবেন। ন্যায্য দাম না পেলে গরু বিক্রি করবেন না বলে জানান তিনি।
করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে গরু বেচাকেনা করতে পারলে লোকসান থেকে রক্ষা পাবে খামার মালিকরা- এমনটাই বলছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসন।
এরই মধ্যে সরকারি উদ্যোগে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রির জন্যে চালু করা হয়েছে ডিজিটাল হাট। এ ডিজিটাল হাটে বিনামূল্যে নিবন্ধন করে পশু বিক্রি করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা।
গত মঙ্গলবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায়। এতে ক্রেতারাও ঘরে বসে গরুর ছবি, ভিড়িও ও ওজন জেনে কিনতে পারবেন। সরাসরি যোগাযোগ অথবা হোম ডেলিভারির মাধ্যমেও ক্রয় করা যাবে বলে জানানো হয়।
এদিকে, গরুর হাটে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। নিশ্চিত হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। সিটি ভাগাড়ের ময়লার দুর্গন্ধের মাঝেও কেউ নিয়ম মেনে পরছেন না মাস্ক। এছাড়া আষাঢ়ের বৃষ্টিতে হাটে তৈরি হচ্ছে কাঁদা। ভাগাড়ের ময়লাযুক্ত কাঁদার মাঝেও চলাচল করতে দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের।
এ ব্যাপারে সিটি হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান কালু জানান, করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার কথা ভেবে বাইরের ব্যবসায়ীরা আসছেন না। যে কারণে হাট এখনও জমে উঠেনি। অনেক ব্যবসায়ী গরু নিয়ে আসছেন কিন্তু ক্রেতা নেই। এতে ব্যবসায়ী-খামারি উভয়ই লোকসানের মুখে আছে।
তিনি আরো বলেন, অনলাইন মার্কেটে গরু ক্রয়-বিক্রয় এটা কঠিন প্রক্রিয়া। এটা আদৌ কতটা সুফল দিবে সেটাও ভাববার বিষয়। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরুহাট পরিচালনার চেষ্টা করছি।
মাইকের মাধ্যমে হাটে আসা ক্রেতা- বিক্রিতাকে সচেতন করছি। হাটে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে কিছুটা কাঁদাযুক্ত পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। এই বিষয়ে সিটি করপোরেশনের একটু নজর দেয়া দরকার।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়