শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৪ ১৪৩১
|| ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪
রাজশাহীর চারঘাটে বাণিজ্যিক ও ব্যক্তি উদ্যোগে শুরু হয়েছে মাশরুম চাষ। বিশেষ করে শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে মাশরুম চাষে আগ্রহ বাড়ছে। বেকার সমস্যার সমাধান এর পাশাপাশি বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে বিশেষ ভূমিকা রাখছে বলে জানিয়েছেন চাষীরা। স্বল্প মূলধন ও বসত বাড়ির অব্যবহৃত জমিতে অথবা ঘরের বারান্দায় খুব সহজেই অধিক পরিমানে মাশরুম চাষ করা সম্ভব। বাজারজাত করা হচ্ছে স্থানীয় রেষ্টুরেন্ট ও মুদি দোকানগুলোতে।
রবিউল ইসলাম উপজেলার চারঘাট ইউনিয়নের পিরোজপুর ডালিপাড়া গ্রামের আতাউর রহমানের বড় সন্তান। বেকারত্ব ঘুচাতে ১৯৯৮ সালে শুরু করেন নার্সারী ব্যবসা যা উপজেলায় রবিউল নার্সারী নামে পরিচিত। শখের বেসে ২০০৭ সালে নিজ বাড়িতে শুরু করেন মাশরুম চাষ।
মাশরুম চাষে তার আগ্রহ দেখে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর এর সহযোগীতায় ২০২৩ সালে সাভার মাশরুম উন্নয়ন ইনিস্টিটিউট এ মাশরুম চাষ সম্প্রসারনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র হ্রাসকরন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১০ দিন ব্যাপি মাশরুম চাষে উদ্যোক্তা প্রশিক্ষন গ্রহন এর সুযোগ পান। এরই ধারাবাহিকতায় পিরোজপুর, ঝিকরা ও মেরামতপুর গ্রামের প্রায় ৩০ জন কৃষককে উদ্বুদ্ধ করে সকলে রাজশাহী হর্টিকালচার এ প্রশিক্ষন গ্রহন করেন।
বসতঘরের আঙ্গিনায় ৭/১০ ফিট বারান্দায় মাশরুম চাষের তার যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে কয়েকটি স্পন প্যাকেট নিয়ে মাশরুম চাষ শুরু করেন তিনি। একেকটি স্পন তৈরি করতে সময় লাগে প্রায় ২৮ দিন ব্যবহৃত হয় কাটের গুড়া, খড়, গমের ভুষি, ধানের গুড়া ও চুন খরচ হয় প্রায় ১৭ টাকা। অথচ প্রতিটি স্পন বাজারে বিক্রি হয় ২৫ টাকায়।
সাধারনত একটি স্পন থেকে ২-৩শ গ্রাম মাশরুম বাহির হয় এবং প্রায় ৩ টা খড়ের প্যাকেট তৈরি করা যায় । প্রতিটি পূর্নাঙ্গ প্যাকেট থেকে প্রায় দেড় কেজি মাশরুম পাওয়া যায়। এরকম একটি ঘর থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ কেজি মাশরুম পাওয়া সম্ভব। সকল উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে মাশরুম চাষ করে প্রতি কেজি ২৫০ টাকা হিসেবে মাসে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি।
তরুন উদ্যোক্তা রবিউল ইসলাম মাশরুম উৎপাদনের পাশাপাশি মাশরুম স্পন তৈরি করেন। তার উৎপাদিত স্পন এলাকা ও অন্য উপজেলায় বিক্রয় হচ্ছে। মাশরুম চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় তাকে দেখে এলাকাবাসীর অনেক বেকার যুবক আগ্রহী হচ্ছে মাশরুম চাষে। মাশরুম চাষ দেখতে অনেকে ভীড় করছেন তার বাড়িতে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকে তার খামারের বীজ নিয়ে মাশরুম চাষ শুরু করছেন। রবিউল বলেন এ খাতে যদি সরকারী সহযোগীতা অথবা স্বল্প সুদে কৃষি ঋন ও বিপনন ব্যবস্থায় সহযোগীতা পেলে শিক্ষিত বেকার যুবকরা মাশরুম চাষ করে বেকারত্ব দূর করতে সক্ষম হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার বলেন মাশরুম খুবই পুষ্টিকর ও স্বুস্বাদু সবজি উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় খুবই লাভজনক ব্যবসা। মাশরুম চাষ খুবই সম্ভাবনাময় ফসল। এদেশের জলবায়ু ও আবওহাওয়া মাশরুম চাষের উপযোগী। বর্তমান বাজারে এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে তাই বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়