বুধবার ১৫ মে ২০২৪ ||
বৈশাখ ৩১ ১৪৩১
|| ০৭ জ্বিলকদ ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০২২
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার অনুপামপুর থেকে বাঘা উপজেলার আড়ানী পর্যন্ত প্রায় ১১ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইট ও খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের ইটের খোয়া এবং পোড়া কালো রঙের ফাঁপা আধলা দিয়ে এ সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চারঘাট থেকে আড়ানী পর্যন্ত প্রায় ১১ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছিল ৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ২৮ জানুয়ারি ২০২০ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ৯ আগস্ট ২০২১ সালে শেষ করার মেয়াদ ছিল।
অথচ নির্ধারিত সময় পরেও কাজ বাস্তবায়ন হয়েছিল মাত্র ৩০ শতাংশ। পরে সড়কের কাজে কিছু পরিবর্তন এনে ইটের খোয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে বরাদ্দ আরও প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
তার পরেও কাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। কাজটি বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কামাল অ্যাসোসিয়েট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড।
প্রায় এক বছর বক্স কেটে ফেলে রাখার পর সম্প্রতি বরাদ্দ বাড়িয়ে রাস্তাটির কাজ শুরু হলেও নিম্নমানের আধলা (অর্ধেক) আকারের ইটের খোয়া ও মাটিযুক্ত বালু দিয়ে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রতিকার চেয়ে স্থানীয়রা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে উপজেলার ফরিদপুর মোড় এলাকায় গেলে দেখা যায়, নির্দিষ্ট পরিমাপের খোয়া দিয়ে রাস্তা নির্মাণের কথা থাকলেও তা না করে রাস্তাজুড়ে নিম্নমানের ইটের খোয়া ফেলে রাখা হয়েছে। সেসব নিম্নমানের খোয়া শ্রমিক দিয়ে সড়কে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাৎক্ষণিক সেই খোয়ায় পানি ছিটিয়ে রোলার দিয়ে পিষে দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে অনুপামপুর গ্রামের বাসিন্দা আরিফ হোসেন বলেন, সড়কে দায়সারা কাজ করলেও অজ্ঞাত কারণে দায়িত্বপ্রাপ্তরা তা দেখেও না দেখার ভান করছেন। নিম্নমানের গুঁড়া ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। বরাদ্দ বাড়লেও সড়কের কাজের মান বাড়েনি।
ওবাইদুর রহমান নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ সড়ক খুঁড়ে মানুষের ভোগান্তি তৈরি করা হয়েছে। এখন আবার একেবারে নিম্নমানের গুঁড়া ইট খোয়া হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করলে কাজের সঙ্গে জড়িতরা মামলার ভয় দেখান।
চারঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই সড়কে আমি নিজেও চলাচল করেছি। তা ছাড়া স্থানীয় বাসিন্দারা সড়ক নির্মাণে অনিয়মের বিষয়ে প্রতিনিয়ত অভিযোগ নিয়ে আসছে। উপজেলা সমন্বয় সভায়ও ওই সড়কের কাজ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
অনিয়মের বিষয়ে ঠিকাদার আব্দুর রশিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বিটুমিন সংগ্রহে চট্টগ্রামে ছিলাম। সে সময় ভাটার মালিক ভালো ইটের সঙ্গে কিছু নিম্নমানের ইট পাঠিয়েছিল। সেগুলো ফেরত পাঠানো হয়েছে। দরপত্র অনুযায়ী সড়কের কাজ করা হচ্ছে। কোনো অনিয়ম হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, এডিবির সহযোগিতায় সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ ছাড়াও সড়কটি ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে নির্মাণকাজ নিয়মিত তদারক করা হচ্ছে। অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়