শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৩ ১৪৩১
|| ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৩ এপ্রিল ২০২২
স্টেশন আছে, তবে সেখানে কোনো জনবল নেই। খেয়ালখুশিমতো এসে থামছে ট্রেন। যদিও তা প্ল্যাটফর্ম থেকে দ্বিতীয় নম্বর লাইনে। তাতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করা যাত্রীরা পড়ছে ভোগান্তিতে। কখনো মই কিংবা চেয়ার দিয়ে, আবার কখনো হাতলে ঝুলে ঝুঁকি নিয়ে ওঠানামা করছে ট্রেনে। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চললেও তাতে রেল বিভাগের কোনো মাথাব্যথা নেই।
পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীর চারঘাটের নন্দনগাছি রেলস্টেশনটি স্থাপিত হয় ১৯২৯ সালে। জনবলের অভাবে ৯৩ বছর আগের স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ২০১৬ সালের শেষের দিকে। এখন সিগন্যাল ছাড়াই এই স্টেশন হয়ে চলাচল করে ট্রেন। আড়ানী ও হলিদাগাছী স্টেশন থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় সিগন্যাল। আন্তনগর ট্রেনগুলো দাঁড়ায় না এই স্টেশনে। উত্তরা এক্সপ্রেস, মহানন্দা এক্সপ্রেসসহ তিনটি লোকাল ট্রেন থামে এই স্টেশনে।
ট্রেন তিনটি তাদের মতো করেই স্টেশনে এসে থামে এবং যাত্রী উঠিয়ে চলে যায়। ট্রেনের নির্ধারিত সময় বেঁধে দেওয়া থাকলেও যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। মাস্টার বা টিকিট কাউন্টার না থাকায় ট্রেনের ভেতরেই যাত্রীদের টিকিট সংগ্রহ করতে হয়।
এই স্টেশনে দুটি পৃথক রেলক্রসিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও ট্রেনগুলো থামে দ্বিতীয় লাইনে। সেটা প্ল্যাটফর্ম থেকে দূরে। ফলে বয়স্ক যাত্রী হলে মই বা চা-দোকানের চেয়ার পেতে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে ওঠানামা করতে হয়। সাধারণ যাত্রীরা ওঠানামা করেন ট্রেনের হাতলে ঝুলে।
স্থানীয় বাসিন্দা রাহেলা বেগম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনে যাতায়াত করি। এখন স্টেশনে লোকবল না থাকায় প্ল্যাটফর্মের ১ নম্বর লাইন দিয়ে কোনো ট্রেন চলাচল করে না। তিনটি ট্রেন ২ নম্বর রেললাইনে দাঁড়ায়। রোগী ও বৃদ্ধ মানুষকে আশপাশের বাড়ি থেকে মই এনে ট্রেনে উঠতে হয়। প্ল্যাটফর্ম দূরে থাকায় অনেক যাত্রী ট্রেনে ওঠানামার সময় পড়ে গিয়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে।’
স্থানীয় নিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, এই স্টেশন ঘিরে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি অফিস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চারঘাট ও পার্শ্ববর্তী পুঠিয়া উপজেলার অনেক যাত্রী এই স্টেশন দিয়ে চলাফেরা করত। কিন্তু স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ায় সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছে হাজারো মানুষ। যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে-নামতে কষ্ট হয়।
পার্শ্ববর্তী সরদহ রেলস্টেশনের মাস্টার ইকবাল কবির বলেন, মূলত জনবলের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ নন্দনগাছি স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহীর (পশ্চিম) চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, নন্দনগাছি স্টেশনের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রয়েছে। স্টেশনমাস্টার নিয়োগ হলে কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হবে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়