রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||
জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১
|| ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫
আমার রাজশাহী ডেস্ক :
প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০২১
নেত্রকোনার জঙ্গলের ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করা সেই অসহায় বৃদ্ধ দম্পতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পাচ্ছেন। তাদের চিকিৎসা সেবার দায়িত্ব নিয়েছে ‘রক্তদানে নেত্রকোনা’ নামে একটি সংগঠন।
প্রশাসন থেকে দেয়া হয়েছে আর্থিক অনুদান। এছাড়া সংসারে আয়ের উৎস হিসেবে একটি দোকানের করে দেয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান এসব ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
প্রসঙ্গেত, গত ১৬ আগস্ট অনলাইন পোর্টাল ‘জাগোনিউজ২৪.কম’-এ ‘খোঁজ রাখে না সন্তানেরা, ঝুপড়ি ঘরে দিন কাটে বৃদ্ধ দম্পতির’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নজরে এলে তারা খোঁজ-খবর নেন।
পরে ১৮ আগস্ট সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিউড়া ইউনিয়নের দুগিয়া গ্রামে যান জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা আক্তার। সেখানে জঙ্গলের ভেতরে কুঁড়েঘরে বসবাস করেন বৃদ্ধ আব্দুল জব্বার ও তার স্ত্রী রাজু আক্তার।
সদর উপজেলার ইউএনও মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে বৃদ্ধ দম্পতিকে একটি ঘর ও ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে তাৎক্ষণিক পাঁচ হাজার টাকা সহায়তা করা হয়। তাদের কর্মসংস্থানের জন্য একটি দোকান করে দেয়া হবে।’
জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, ‘জাগো নিউজে প্রকাশিত সংবাদটি আমার এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে আমি নিজে দম্পতির ঘরে গিয়েছিলাম। প্রতিবেদনের তথ্যের সঙ্গে বাস্তবের মিল পেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘তাৎক্ষণিক আমরা তাদেরকে কিছু টাকা দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর উপহার একটি আধা পাকা বাড়ি করে দেয়া হচ্ছে। তাদেরকে সংসারে আয়ের উৎস হিসেবে দোকানের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এছাড়া চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করছি আমরা।’
এসময় বৃদ্ধ দম্পতির কষ্টে দিন কাটানো নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় জাগো নিউজের প্রতিবেদকসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান জেলা প্রশাসক।
আব্দুল জব্বার ও রাজ আক্তার দম্পতির সাত মেয়ে দুই ছেলে তার। মেয়েরা বিবাহিত ও ছেলেরা ঢাকায় রিকশা চালান। কিন্তু কেউই খবর রাখেন না বৃদ্ধ বাবা-মায়ের। শেষ বয়সে গ্রামে বুট, চানাচুর, কেক বিক্রি করেন তিনি।
নেত্রকোনা সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিউড়া ইউনিয়নের দুগিয়া গ্রামে জঙ্গলের ভেতর চার শতাংশ জায়গায় একটি কুঁড়ে স্ত্রী রাজু আক্তারকে নিয়ে বসবাস করেন তিনি। তিনি শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। জন্মগত পঙ্গুত্বের কারণে একা উঠে বসতে পারেন না। সারাদিন পাড়া-মহল্লায় বুট, চানাচুর বিক্রি করে সন্ধ্যায় অসুস্থ স্ত্রীকে দেখাশোনা ও রান্নাবান্নার কাজ করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্জন জঙ্গলে মধ্যে একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করেন আব্দুল জব্বার দম্পতি। সামান্য বৃষ্টিতে পানি ঢুকে ঘরে। সেই পানি ঘরের চুলা পর্যন্ত ঢুকে যায়। তখন রান্নাবান্নাও বন্ধ থাকে। কখনো প্রতিবেশীদের বাড়িতে ছুটতে হয়ে তাকে।
বয়সের ভারে বৃদ্ধ আব্দুল জব্বারের চোখ দুটোতেই ছানি পড়েছে। শারীরিকভাবে নিজেও অসুস্থ। কয়দিন আগে স্ত্রী রাজু আক্তারের পা কেটে যাওয়ায় সেখানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। চিকিৎসার অভাবে সেই ক্ষত পচে পোকা ধরেছে। মাসুদুল করিম মাসুদ নামের স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবী তরুণ তার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়