শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৩ ১৪৩১
|| ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২০
একদিকে সরষে ফুলের হলুদ সাম্রাজ্যের মাতাল করা সুগন্ধ আর একদিকে মৌমাছির গুঞ্জন যেন প্রকৃতির মাঝে মনোমুগ্ধকর এক স্বর্গীয় অনুভূতি। সরষে ফুলে মধু আহরণে এসে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছির দল আশ্রয় নিয়েছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার এক ফিলিং ষ্টেশনের কার্নিশে।
ফিলিং ষ্টেশনটির নাম মেসার্স তাহেরপুর ফিলিং ষ্টেশন। বর্তমানে এই ফিলিং ষ্টেশনটি মৌমাছির অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে। একটি-দুইটি নয় আট থেকে ১০ টি মৌচাক বেধে সেখানে অভয়ারণ্য গড়ে তুলেছে মৌমাছির দল।
এ সব মৌমাছিগুলো সব সময় উড়ে বেড়ালেও কারো গায়ে হুল ফোটায় না, এমনকি আশপাশে থাকা লোকজনদের ওপরও কখনো আক্রমণ করে না। তারা তাদের মত করেই চলাফেরা করছে। এত মৌচাক আর মৌমাছির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিয়তই আশপাশের মানুষ এখানে ঢু দিচ্ছেন।
তাদের কেউ বাসা পাহারায় ব্যস্ত। আবার কেউ মনের আনন্দে নেচে নেচে গুনগুন করে গান গাইছে। এই মুগ্ধকর পরিবেশ যেন বাড়তি আনন্দের যোগান দিচ্ছে সবাইকে। এতে পথচারী এবং ষ্টেশনে আসা লোকজনদের হৃদয়ে ভালোবাসার জায়গা করে নিচ্ছে মৌমাছিগুলো।
মৌমাছির দল ষ্টেশনটির এলাকা জুড়ে সারাক্ষন গুনগুন গুঞ্জনে মুখরিত করে রাখছে চারপাশের পরিবেশকে। তারা নিজেদের সুবিধা মত ষ্টেশনটির চারপাশ জুড়ে প্রায় ৮ থেকে ১০ মৌচাক তেরী করেছে। তারপর হাজারো মৌমাছি মধু আহরণে ছুটাছুটি করছে। তারা সরষে ফুলের হলুদ পাপড়ির হলদে আভায় নিজেদের শরীরকে সাজিয়ে নিচ্ছে অন্যদিকে তা থেকে মধু সংগ্রহের ব্যাপারেও ব্যাপক সচেতন। তারা বিন্দু বিন্দু মধু আহরণ করে ছুটে আসছে এই ফিলিং ষ্টেশনে তাদেরই গড়া রাজপ্রাসাদে।
সেখানে বিন্দু বিন্দু মধু দিয়ে গড়ে তোলেন মধুর সম্ভার।
বাণিজ্যিক ভাবে মধু চাষ করে অনেকেই লাভবান হচ্ছেন। মধু চাষ একটি অর্থকারী পেশা। কেউ সারা বছর তো কেই মৌসুমী ভাবে মধুচাষ করেন। মধু চাষে আগ্রহী হয়ে অনেকেই ঝুঁকছে এই মৌসুমী মধু চাষ পেশায়। অনেকেই প্রস্তুতি নিয়ে এ পেশায় আসলেও এই ফিলিং ষ্টেশনে কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়াই মধু আহরণের উৎস হিসেবে প্রকৃতিক ভাবে গড়ে উঠেছে এই মৌচাকগুলো।
মৌমাছিগুলো শুধু সকলের মনোরঞ্জনই করছে না বরং অর্থনৈতিক ভাবেও লাভবান করছেন ফিলিং ষ্টেশনটির মালিকসহ কর্মচারীদের।
তাহেরপুর ষ্টেশনটির এক কর্মচারী জানান, এখানে প্রায় পাঁচ বছর ধরে প্রতি সরিষার মৌসুমে মৌমাছির দল এসে এখানে বাসা বাঁধে। শুধু সরিষাই নয় আরো বিভিন্ন ফুল থেকে তারা মধু সংগ্রহ করে। সব মিলিয়ে বছরে প্রায় তিন থেকে চার মাসের জন্য তারা এখানে আসে। এবারেও প্রায় দুই মাস হলো এখানে এসেছে মৌমাছিগুলো। এরই মধ্যে দুই বার মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে অনেক মধু হয়েছিলো। মধু একদিকে যেমন খাদ্য চাহিদার যোগান দিচ্ছে অপর দিকে অর্থনৈতিক ভাবেও স্বাবলম্বী করছে তাদের। প্রায় ১৫ দিন পরপর তারা মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করবেন বলে জানান ওই কর্মচারী।
স/এমএস
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়