শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৩ ১৪৩১
|| ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯
বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বগুড়ার আনোয়ার হোসেন তালুকদার নিয়েছেন ব্যতিক্রমধর্মী এক উদ্যোগ। বাল্যবিবাহ রোধের বিভিন্ন আহবান নিয়ে বাইসাইকেলে চেপে দেশের ৬৪ জেলা পরিভ্রমণ শেষে এখন তিনি প্রতিটি উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে প্রচার চালিয়ে থাকেন।
লাল রং এর গেঞ্জি, লাল টুপি, লাল সাইকেল, লাল চশমা, লালবাঁশি, হাতে লাল হ্যান্ড মাইক আর লাল সবুজের পতাকা নিয়ে ঘুরছেন পঞ্চাশোর্ধ আনোয়ার। যেন লাল রং দিয়ে বাল্যবিবাহের বিপদকেই জানান দিচ্ছেন সবার মাঝে। সাইকেলের সামনে পিছনে লেখা রয়েছে তার যাত্রার উদ্দেশ্য। রাস্তায় কোথাও দাঁড়ালেই লোকজনকে বলছেন বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে। কয়েকদিন থেকে রাজশাহী অঞ্চল ভ্রমন করছেন। বিশেষ করে জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতা নিয়ে প্রচার শুরু করেন।
বর্তমানের বেশীরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিভিন্ন জনবহুল স্থানে তিনি এই প্রচারণা চালাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলা পরিভ্রমন করেছেন। এরআগে তিনি ২১৫টি উপজেলায় বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে প্রচার চালিয়েছেন। তার সাথে কথা হয় পবা উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসে।
আনোয়ার হোসেন তালুকদার জানান, ২০১৫ সালের জানুয়ারির ১৫ তারিখ থেকে মার্চের ২০ তারিখ পর্যন্ত ৬৭দিনে ঘুরেছেন ৬৪ জেলা। চলতি বছরের গত ১৭ অক্টোবর থেকে দেশের প্রতিটি উপজেলা ঘুরে প্রচার চালানোর জন্য শুরু করেন আবার সাইকেল যাত্রা। প্রতিটি উপজেলার যাত্রাপথের বিভিন্ন স্কুলে লিফলেট বিতরণ করেন বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে। তার ব্যতিক্রমী উপস্থাপনা মনযোগ দিয়ে শোনে স্কুলের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা। আনোয়ার হোসেন বন্ধুর মত মিশে তাদের সাথে গল্পের ছলে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে জানান। এ সবকিছুতেই তারা খুবই অনুপ্রাণিত হচ্ছে। তাদের স্কুলে মাঝে মধ্যেই মেয়েদের বাল্য বিয়ে হয়ে যায়। ভবিষ্যতে যেন এ ধরণের বিয়ে না হয়। এ জন্যে তারা সবাই সোচ্চার হবে।
বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে আনোয়ার হোসেনের লিফলেটে রয়েছে- বাল্য বিবাহ করিলে স্বামী-স্ত্রীর ঝুকির মধ্যে পড়ে, প্রসবে নারী জীবনের ঝুকিতে পড়ে, প্রসবকালে অনেক মা জীবন হারায়, সন্তান সুস্থ্য ও সবল হয়না এবং পুষ্টিহীনতায় ভোগে। এছাড়াও রয়েছে-বাল্য বিবাহ দেখলে প্রশাসনকে দ্রুত জানান ও ছেলে হলে ২১ বছর এবং মেয়ে হলে ১৮ বছরের নীচে বিবাহ দিবেন না, বাল্য বিবাহ করিলে জেল ও জরিমানা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
পবা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শিমুল বিল্লাহ সুলতানা বলেন, আনোয়ার হোসেন যেমন তার কাজকর্ম ফেলে বাল্যবিবাহের মত সামাজিক ব্যাধি দূর করতে সারাদেশ চষে বেড়াচ্ছেন। তেমনি আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত নিজ নিজ এলাকায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা। সামাজিক ও পারিবারিকভাবে সচেতন না হলে বাল্য বিয়ে বন্ধ করা সম্ভব না। প্রতি গ্রামে একজন করে আনোয়ার হোসেন প্রয়োজন।
স/সা
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়