শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||
জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১
|| ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০ আগস্ট ২০১৯
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গণিপুর ইউপি চেয়ারম্যানসহ তিনজন ইউপি সদস্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে মুচলেকা দিয়ে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের কাছ থেকে কেটে নেয়া টাকা ফেরত দিয়ে রক্ষা পেয়েছেন। এছাড়াও কোনো দিন তারা এই ধরনের অপকর্মের সঙ্গে নিজেদের জড়াবেন না বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলামের কাছে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেন। অসহায়দের টাকা মুচলেকা দিয়ে ফেরত দেয়ায় প্রথমবারের মত ক্ষমা করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি অর্থ বছরে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য উপজেলার গনিপুর ইউনিয়ন পরিষদে নতুন ২০ জনকে ভাতাভোগী তালিকাভুক্ত করা হয়। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুল মমিনকে সরকারের উর্ধ্বতন মহলের নির্দেশে ঈদুল আযহার আগেই ওই সকল ভাতাভোগিদের ভাতার টাকা প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়।
সরকারের এমন নির্দেশের কারণে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বিষয়টি লিখিত ভাবে জনতা ব্যাংক মোহনগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপককে জানানো হয়। সমাজসেবা কর্মকর্তার লিখিত নির্দেশনা পেয়ে জনতা ব্যাংক মোহনগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক কার্ডধারীদের টাকা দেয়ার জন্য গত বৃহস্পতিবার সময় নির্ধারণ করেন।
সেই মোতাবেক ভাতাভোগিদের খবর দেয়ার জন্য গনিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান রঞ্জুকে অবহিত করেন। ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান রঞ্জু ভাতাভোগিদের না জানিয়ে তার আজ্ঞাবহ তিন ইউপি সদস্যকে টাকা দেয়ার বিষয়টি জানান।
বৃহস্পতিবার সকালে ইউপি সদস্য সাবদুল আলী, মজনুর রহমান ও নুর ইসলাম মোহনগঞ্জ জনতা ব্যাংকে যান এবং ব্যাংকের দুই একজন অসাধু কর্মচারীকে নিয়ে ভাতাভোগিদের ১ লাখ ৮১ হাজার ২০০ টাকা উত্তোলন করে তাদের মাঝে বিতরণ শুরু করেন।
বিতরণে ইউপি সদস্যরা উপস্থিত ভাতাভোগিদের কাছ থেকে ১ হাজার করে টাকা কর্তন করেন এবং যে সকল ভাতাভোগিরা উপস্থিত ছিল না তাদের পরিবর্তে টিপ/সহি জাল করে টাকাগুলো নিজেদের পকেটে তোলে। বিষয়টি জানার পর স্থানীয় লোকজন ঘটনার প্রতিবাদ করেন এবং ঘটনাটি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেন।
ঘটনাটি জানার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম ঘটনাস্থলে গেলে ইউপি সদস্যরা ভাতাভোগির টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। তাদেরকে না পেয়ে তিনি তিন ইউপি সদস্যকে শোকজ করেন এবং ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের কাছ থেকে ভাতাভোগিদের ১ লাখ ৮১ হাজার ২০০ টাকা আদায় করে তাদের মধ্যে বিতরণ করেন।
গতকাল শুক্রবার ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামানসহ তিন ইউপি সদস্য ভাতাভোগিদের টাকা মুচলেকা দিয়ে ফেরত দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দফতর থেকে ছাড়া পান।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম বলেন, মুচলেকা দিয়ে তারা টাকা ফেরত দেয়ায় প্রথমবারের মত তাদেরকে ক্ষমা করা হয়েছে। পরবর্তিতে ইউনিয়নের অসহায় মানুষদের নিয়ে কোনো অপকর্ম করলে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়