শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৩ ১৪৩১
|| ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল ২০২০
ভারতের কলকাতায় আরাম-আয়েশে দেড় যুগের বেশি সময় পার করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদ। কলকতায় বসে তিনি বাংলাদেশে কথা বলতেন দুটি ফোন নম্বরে। বাংলাদেশ থেকে তাকে নিয়মিত টাকা পাঠাতেন দুই ব্যক্তি।
জানা গেছে, টাকা পাঠানো দুইজনই বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তবে এখনও সব তথ্যপ্রমাণ হাতে না আসায় তাদের গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। এদিকে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে এই দুই নেতার একজনের বাড়ি চট্টগ্রাম ও অন্যজনের বাড়ি নোয়াখালীতে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
নিয়মিত বাংলাদেশে থাকা স্বজন ও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে দুটি মোবাইল ফোন নম্বরে কথা বলতেন খুনি মাজেদ। ওই নম্বর দুটি ঢাকার গোয়েন্দারা পর্যবেক্ষণ করছিলেন বলে ধারণা করছেন কেউ কেউ। এরই সূত্র ধরে মাজেদকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ভারত থেকে মাজেদের বাংলাদেশে প্রবেশ নিয়ে দুই দেশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এখনো কোনো পরিষ্কার ধারণা দেননি।
নাম না প্রকাশের শর্তে এক তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ঘাতক মাজেদ কলকাতায় বিয়ে করেন নিজের চেয়ে অর্ধেকেরও কম বয়সী এক নারীকে। ২৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাটের বুকিং দেন। নাম পাল্টে ভারতীয় পাসপোর্টও নিয়েছিলেন তিনি। কলকাতায় নানা অনৈতিক ও অবৈধ কর্মকাণ্ডেও যুক্ত ছিলেন তিনি।
ঢাকার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের জটিলতার মধ্যে অসদুদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য ঢাকায় আসেন মাজেদ। তবে তার আগেই ধরা পড়ে যান তিনি। গত ৭ এপ্রিল রাজধানীর গাবতলী থেকে খুনি মাজেদকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাজেদ। সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে গত শনিবার (১১ এপ্রিল) মধ্যরাত ১২টা ১ মিনিটে কার্যকর হয় তার ফাঁসি।
খুনি মাজেদ কলকাতায় আলী আহমেদ নামে ভারতীয় পাসপোর্ট বাগিয়ে নেন। পাসপোর্টে তার জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৪৭ সালের ৪ জানুয়ারি। ২০১৭ সালে তৈরি এ পাসপোর্টের মেয়াদ রয়েছে ২০২৭ সাল পর্যন্ত। তার জন্মস্থান দেখানো হয় হাওড়া। মাজেদকে নিয়ে সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের দৈনিক বর্তমান ‘ঘাতকের ডেরা’ শিরোনামে সিরিজ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনগুলোয় উঠে এসেছে মাজেদের কলকাতা জীবনের আদ্যোপান্ত; একই সঙ্গে কলকাতা থেকে ঢাকা ফেরার কাহিনিও।
ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক সূত্র বর্তমান পত্রিকাকে জানিয়েছে, মাজেদের মোবাইল ফোনের সব শেষ টাওয়ার লোকেশন ছিল মালদহ, যা থেকে গোয়েন্দাদের অনুমান, তাকে ঘুরপথে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাওড়া স্টেশনে। সেখান থেকে ট্রেনে প্রথমে গৌহাটি, পরে শিলং হয়ে ডাউকি সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ। ধারণা করা হচ্ছে, ট্রেন মালদহ স্টেশনের আশপাশে থাকাকালে মাজেদ একবার ফোনটি চালু করেছিলেন।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়