শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||
জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১
|| ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫
ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১০ আগস্ট ২০১৯
চীন থেকে নিয়ে আসা মশার নতুন কীটনাশক এর আনুষ্ঠানিক প্রয়োগ শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। এরইমধ্যে ডিএনসিসির সবগুলো অঞ্চলে এটি পৌছেছে, খুব শীঘ্রই সকল ওয়ার্ডে এটি পৌছাবে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী তাজুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে এই কীটনাশক প্রয়োগ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে মন্ত্রী ও মেয়রের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে কীটনাশক প্রয়োগ শুরু করা হয়।
এ সময় মেয়র বলেন, দ্রুত ও অধিক এলাকায় নাগরিক সেবা দিতে পিকআপ ট্রাক ও মটরবাইকে ফগার মেশিন ও লার্ভিসাইড স্প্রেয়ার সংযোজন করা হয়েছে। আমরা অধিক লোকবল নিয়েছি, এলাকার জন্য কীটনাশকের বরাদ্দও বাড়ানো হয়েছে।
বাইকের মাধ্যমে ওষুধ ছিটানোর প্রক্রিয়া দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং মশককর্মীদের আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করার নির্দেশ প্রদান করেন।
মেয়র বলেন, মশক কর্মীদের হেঁটে হেঁটে ওষুধ দিতে হয় বলে তাদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিলো, এখন হেঁটে হেঁটে এবং গাড়ি করে দুভাবেই মশক নিধন হবে। একবার কীটনাশক দেয়া শেষ হলে গাড়িতে রাখা অতিরিক্ত কীটনাশক থেকে আবার রিফিল করতে পারবে। এর ফলে ওয়ার্ড অফিসে এসে রিফিল করার ঝামেলা এবং সময়ক্ষেপণ আর থাকবে না।
এরপর মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ মেয়র মোহাম্মদপুর টাউন হল এলাকার বাজারের বিভিন্ন দোকান, আবাসিক ভবন এবং অলিগলি পর্যবেক্ষণ করেন এবং তাৎক্ষণিক আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে অলিগলির আবর্জনা পরিষ্কারের নির্দেশ দেন।
তিনি অত্র এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন এবং মশার প্রজননস্থল হতে পারে এমন কিছু চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মেয়র বলেন, অপরিচ্ছন্নতার বিরুদ্ধে আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। একটি স্লোগান “জমা পানি ফেলে দিন, তিন দিনে একদিন”। অর্থাৎ প্রতি তিনদিনে অন্তত একবার যাতে আমরা জমানো পানি ফেলে দেই।
আতিকুল ইসলাম আরো বলেন, আমাদের কীটনাশক সংশ্লিষ্ট সব দফতরে পরীক্ষিত হয় এসেছে। আজ থেকে নতুন ওষুধ ছিটানো শুরু হলো। তবে আমরা যেমন ওষুধ ছিটাবো, তেমনি সবাইকে সচেতন হতে হবে। আমরা যারা ঈদে বাড়ি যাচ্ছি সবাই খেয়াল রাখব যেন আমাদের বাসার ভেতরে বালতি, বদনা, বাটী, পট, গাছ বা ফুলের টব এগুলো যেন উল্টে দিয়ে যাই, যাতে এগুলোতে পানি জমতে না পারে। জানালার পর্দা যেন খুলে ভাঁজ করে যাই পারলে এরোসল ছিটিয়ে যাই যাতে এসব স্থানে মশা বসবাস করতে না পারে।
তিনি বলেন, কমডের ঢাকনা যেন নামিয়ে যাই, সম্ভব হলে কমোডে একটু বেশি করে ন্যাপথলিন দিয়ে যেতে পারেন। বাড়ির প্রহরী বা কেয়ারটেকার থাকলে তাদেরকে বিশেষভাবে বলে দেয়া যাতে তারা বাড়ির চারপাশ ও ছাদ, বাগান এসব পরিষ্কার করে রাখেন। মনে রাখবেন আপনার একটু সতর্কতা নিরাপদ রাখবে আপনাকে এবং আপনার পরিবারসহ প্রতিবেশীদেরকে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশমতো সকলে মিলে কাজ করলে আমরা অবশ্যই ডেঙ্গুমুক্ত দেশ গড়তে পারবো উল্লেখ করে তিনি সকল নাগরিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
পরিদর্শন শেষে এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার সর্বাত্মকভাবে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করছেন। আজ বন্ধের দিনেও আমরা এসেছি, আপনারা এসেছেন। সচিবালয়ে গেলে দেখবেন আমাদের মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দফতরের সকল কর্মকর্তা কাজ করছেন। এই ধারা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের গ্রাম পর্যায়ের দফতরেও অব্যাহত আছে। দুই সিটি কর্পোরেশনকে আমরা নতুন করে এক হাজার ৬০০ কর্মী দিয়েছি।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে শিশুদের পাঠ্য বইতে সচেতনতামূলক অধ্যায় অন্তর্ভুক্তির তাগিদ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অনেক দেশেই দেখেছি শিশুদের পাঠ্য সিলেবাসে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে, স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়ে, সংক্রামক রোগ যেমন ডেঙ্গু বা এডিস মশার বিষয়ে পড়ানো হয়। ডেঙ্গু বিষয়ে আমাদের বছরের ৩৬৫ দিন কাজ করতে হবে। আমাদের সবার দায়িত্ব আছে। সরকার তার সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করলেও শহরের সব বাসা পরিষ্কার করতে পারবে না, কিন্তু প্রতিটি বাড়ির মালিক যদি যদি মাত্র একদিন স্ব-উদ্যোগে কাজ করেন তাহলে একদিনেই শহরের সব বাড়ি পরিষ্কার সম্ভব হবে।
এসময় ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই, সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোমিনুর রহমান মামুন, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মীর নাহিদ আহসানসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়