শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৩ ১৪৩১
|| ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০২০
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান (২৮) হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। গতকাল সোমবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে মোস্তাফিজুরের গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুরের নওপাড়া গ্রামে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে অংশ নেন গ্রামের দুই শতাধিক মানুষ।
শিশুসন্তান কোলে নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন মোস্তাফিজুরের স্ত্রী। তিনি বলেন, দুই বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়। আমার কোলে এখন এক বছরের একটি সন্তান। পড়াশোনা শেষ করেই আমার স্বামী উপার্জনের জন্য চেষ্টা করছিল। একটা চাকরিও পেয়েছিল। স্বপ্ন ছিল আরও ভাল একটা চাকরি পেলে সন্তানটা মানুষের মতো মানুষ করতে পারবো।
কিন্তু তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার সন্তানের ভবিষ্যত এখন অন্ধকার। যে সন্ত্রাসীরা আমার শিশু সন্তানকে এতিম করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।
কর্মসূচিতে মোস্তাফিজুরের মা বলেন, আমার দুই ছেলে। খুব কষ্টে মোস্তাফিজুরের লেখাপড়া করিয়েছি। আশা ছিল- আরও ভাল একটা চাকরি পাবে। নিজের সংসার দেখবে, আমাদের ভাগ্যও পাল্টাবে। কিন্তু আমার সন্তানকে মেরে ফেলল ওরা। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, মা হিসেবে দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় বাসিন্দারাও মানববন্ধন চলাকালে বক্তৃতা করেন। তারা বলেন, দরিদ্র পরিবারের সন্তান মোস্তাফিজুর অনেক কষ্টে লেখাপড়া শেষ করে চাকরি পেয়েছিলেন। দরিদ্র পরিবারটি তার উপার্জনেই চলত। তাঁর এক বছরের ছেলে রয়েছে। এ অবস্থায় ছিনতাইকারীরা তাঁকে মেরে ফেলল। এখন এই পরিবারের ও ছোট শিশুর কী হবে? এসময় অবিলম্বে মোস্তাফিজুর হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেন তারা।
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৮ নং ওয়ার্ড নওপাড়ার ইউপি সদস্য জয়নুল আবেদিন, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আফাজ উদ্দিন, কলেজ শিক্ষক ড. মো. জয়নুল আবেদীন, রাজশাহী সরকারী সিটি কলেজের প্রভাষক আইনাল হক প্রমূখ।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার ভোরে ঢাকার সাভার পৌর এলাকার শিমুলতলায় সিআরপি সড়কে তিনি ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হন। তাঁকে হারিয়ে তাঁর পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় সোমবার সকালে সাভার থানায় মোস্তাফিজুরের বাবা মোজাহার আলী বাদী হয়ে ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেছেন।
নিম্ন আয়ের পরিবারে জন্ম নেওয়া মোস্তাফিজুর রহমান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন ২০১৯ সালে। সে বছরই ঢাকার সাভারের গ্লোরিয়াস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশাসনিক ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি পান তিনি। হতদরিদ্র পরিবারে মোস্তাফিজুরই হয়ে উঠেছিলেন একমাত্র ভরসা।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়