রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||
জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১
|| ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫
প্রকাশিত: ৭ নভেম্বর ২০১৮
ক্যালেন্ডার জানান দিচ্ছে আজ ৭ নভেম্বর। দেশবিরোধী বিএনপি-জামায়াত রাজাকারগোষ্ঠীর জন্য দিনটি উল্লাসের হলেও মূলত এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বেদনাদায়ক দিন। ক্ষমতালিপ্সু, বেঈমান জিয়া এই দিনে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অসংখ্য সেনা অফিসারকে হত্যার ইন্ধন দেন এবং নিজের ক্ষমতায় যাবার পথ পরিষ্কার করেন। আদতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তী পুরো সময়টুকু বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরকালই এক হিংস্র-ভয়াবহ- বিভ্রান্ত সময়ের ডায়েরি হয়ে বেঁচে থাকবে। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে এই সময়ে একের পর এক ঘটে গেছে চূড়ান্ত বিপর্যয়ের ঘটনাগুলো, যা ছিল একই সাথে দুঃখ এবং লজ্জাজনক। স্বাধীনতা লাভের পরেই এইসব ভয়ংকর ঘটনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে একটি স্বাধীন জাতির মেরুদণ্ড । দেশের রাজনৈতিক কাঠামোর এই পরিবর্তনকে সাধুবাদ জানানোর কোন অবকাশ নেই। বাংলাদেশের ইতিহাসে ’৭৫ এর পর থেকে একের পর এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছিলো ঠান্ডা মাথার খুনীদের একটি দল। ১৫ই আগস্ট সপরিবারে জাতির জনকের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের পরে সংঘবদ্ধ খুনীচক্র ৩রা নভেম্বর জেলের ভিতরেই হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের চার স্তম্ভ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী চার নেতা তাজউদ্দিন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, আ. হ. ম. কামরুজ্জামান এবং মনসুর আলীকে। এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ মদদ ছিল ভণ্ড জিয়ার। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পরে দেশের আপামর জনগণ যখন হতবিহবল এবং শোকগ্রস্থ, তখন ৩ নভেম্বরের এই ঘটনা পুরো জাতিকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। কিন্তু এই মারাত্মক সব ঘটনা প্রবাহের প্রকৃত খবর থেকে জনতা ছিল অনেক দূরে। বিদেশী সাংবাদিকদের তখন বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ৩ নভেম্বরের এই জেলহত্যার ঘটনাটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত, দুই মাস আগেই ঘাতকেরা পরিকল্পনা করে রেখেছিল যে, সর্বাগ্রে জেলবন্দি এই চার নেতাকে হত্যা করা হবে। ৩ থেকে ৬ নভেম্বর, এই চারদিন অসংখ্য ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়। এরপর মঞ্চে আসেন কর্নেল তাহের। জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করেন তিনি। যার চরম মূল্য দিতে হয়েছে জিয়ার বেঈমানিতে ফাঁসির দড়িতে জীবন দিয়ে। পৃথিবীর ইতিহাসে প্রাণ রক্ষাকারী মানুষটিকে কোন ব্যক্তি ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন এমন নজির সম্ভবত আর নেই। শুধু তাই নয়, তারই ইন্ধনে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ সহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা অফিসারকে হত্যার ইন্ধন দেন। আসলে ৭ নভেম্বরে স্বাধীনতাবিরোধীদেরকে একত্রিত করার দিন। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এই ঘটনাটি একটি বড় ধরণের আঘাত। যা বেশ সফলভাবেই করেন জিয়া। আজ যারা এই কলঙ্কময় দিনটিকে বাহারী নামে আখ্যায়িত করে জাতির সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছেন, তারাও অচিরেই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন বেঈমান জিয়ার মতোই।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়