সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||
বৈশাখ ২৩ ১৪৩১
|| ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০২৪
পশ্চিম আকাশে সূর্যটা হেলে পড়লেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে ভিড় জমতে থাকে। কারও হাতে ছোলা, মুড়ি। কেউ ব্যস্ত শরবত বানাতে। কেউ কাটছেন ফল, কেউ সাজাচ্ছেন প্লেট-গ্লাস। সবাই এসেছেন ইফতার আয়োজনে শরিক হতে।
এভাবেই রমজানে প্রতিনিয়ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসজুড়ে ইফতার কেন্দ্র করে চলছে উৎসবের আমেজ। খোলা মাঠে ইফতারে উৎসবমুখর হয়ে উঠছে পুরো ক্যাম্পাস।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভিন্ন বিভাগের ইফতার, আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের ইফতার, বর্ষভিত্তিক ইফতার, বিভিন্ন সংগঠনের ইফতারসহ দলে বিভক্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা ইফতারের আয়োজন করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, রমজানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের সামনে, ক্যাম্পাস সংলগ্ন বিনোদপুর বাজার, স্টেশন বাজার ও কাজলায় ইফতারের অস্থায়ী দোকান বসেছে। সেখানে মুড়ি, আলুর চপ, পিঁয়াজু, ডিমের চপ, বেগুনি, জিলাপি, খেজুর, বুন্দিয়া, নানা রকমের মুখরোচক খাবার এবং বিভিন্ন রকম ফলমূল বিক্রি করা হচ্ছে। আসরের পর থেকে দোকানগুলোতে থাকে শিক্ষার্থীদের ভিড়। কেনাকাটা শেষে একত্রিত হন খোলা জায়গায় বা মাঠে। সেখানেই চলে ইফতার আয়োজন। ইফতার শেষে মাঠেই দলবদ্ধ হয়ে নামাজ পড়েন অনেকে।
কথা হয় ইফতারি তৈরিতে ব্যস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তারিফুল ইসলাম মুহতাদি সঙ্গে। তিনি বলেন, খোলা আকাশের নিচে দুর্বাঘাসের ওপর বসে আমরা প্রায়ই একসঙ্গে ইফতার করি। বিভিন্ন হল থেকে ভালোবাসার টানে এক হয়ে খোলা মাঠে ইফতারের আয়োজন করি। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জেলা সমিতি, হলভিত্তিক সিনিয়র-জুনিয়রসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল রয়েছে যারা একসঙ্গে ইফতার করে।
ভিন্ন ধর্মের শিক্ষার্থীরাও আসেন ইফতারের আয়োজনে। লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সৌরভ দেব বলেন, বিভাগ কিংবা বন্ধুদের পক্ষ থেকে ইফতারের আয়োজন করা হলে আমরাও উপস্থিত হই। এমন আয়োজনে আসতে পেরে বেশ ভালো লাগে। আমার কাছে মনে হয় এ ধর্মীয় রীতি পরিবার ও সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করে এবং দান, সৌহার্দ্যের মতো বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসে।
ছোট ভাইদের দাওয়াতে খোলা মাঠে ইফতারি করতে যোগ দিয়েছেন তারেক মাহমুদ। তিনি বলেন, অসম্ভব সুন্দর এক অনুভূতি। খোলা মাঠে ইফতারি করা এটাও রোজাদারদের জন্য প্রশান্তির কারণ। প্রথমে ছোট ভাইদের দাওয়াতে মানা করলেও পরে খোলা মাঠে ইফতারের কথা শুনে সম্মতি দিয়েছি। ছোট ভাই, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে নিয়ে ইফতারের আনন্দটাই অন্যরকম।
ইফতারের আয়োজন সম্পন্ন করতেই চলতে থাকে নানা রকমের গল্প। এরই মাঝে গোধুলীলগ্নে ভেসে আসে মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনি। শিক্ষার্থীরা একে ওপরের সঙ্গে ভাগ করে নেয় খাবার। এভাবেই সম্প্রীতির বন্ধনের অনন্য গল্প তৈরি করে ক্যাম্পাসের ইফতার আয়োজন।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়