শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||
বৈশাখ ২০ ১৪৩১
|| ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৭ মার্চ ২০২২
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে নিহত এসআই নূর ইসলামের শেষ গন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। রাত সোয়া ১২টায় তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে তার কর্মস্থল চাঁপাইনবাবগঞ্জের পথে না গিয়ে রহস্যজনক কারণে তানোরের দিকে যাচ্ছিলেন। তবে তার কললিস্ট ধরে ওই পথে যাওয়া ও মৃত্যু রহস্য খুঁজছে পুলিশ।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, গত শুক্রবার রাত সোয়া ১২টায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী-আমনুরা সড়ক হয়ে তানোরের দিকে যাচ্ছিলেন এসআই নূর ইসলাম। পথে বিশ্বনাথপুর কাজীপাড়া এলাকায় রাস্তার পাশে তাকে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। সে সময়ও তিনি জ্ঞান হারাননি। বরং পুরোনো কর্মস্থল গোদাগাড়ী উপজেলার পরিচিত কিছু মানুষকে ফোন করে উদ্ধারের আবেদন জানান।
নিহত এসআইর মোবাইল কললিস্ট দেখে পুলিশ জানান, নূর ইসলাম ঘটনাস্থলে মারা যাননি। তিনি দুর্ঘটনার পর তার পরিচিত গোদাগাড়ী উপজেলার পরিচিত কিছু মানুষকে ফোন করে দুর্ঘটনার কথা জানান। এ সময় তিনি তাদের কাছে উদ্ধারের জন্য সাহায্য চান। তবে তাদের এগিয়ে আসার আগেই স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার পর দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, নূর ইসলাম একসময় গোদাগাড়ী থানায় কর্মরত ছিলেন। পরে তিনি তানোর ও বাগমারা থানায় দায়িত্ব পালন করেন। বাগমারায় দায়িত্ব পালনকালে একটি নারী নির্যাতন মামলায় একপেশে ও দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে চার্জশিট দেন। এ ঘটনার প্রমাণ হলে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হাসান তাকে শাস্তি হিসেবে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজ করেন। এক মাস আগে এসআই নূর ইসলামকে আবারও চাঁপাইনবাবগঞ্জ মডেল থানায় পদায়ন করা হয়।
তবে এক সপ্তাহ আগে তিনি বাসা বদল করার কথা বলে ছুটি নেন। শুক্রবার রাত সোয়া ১২টায় গোদাগাড়ী-আমনুরা সড়ক হয়ে তিনি তানোরের পথে যাচ্ছিলেন। এ থেকে পুলিশ ধারণা করছে, তিনি নেশাগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারেন। নয়তো এত গভীর রাতে তিনি কেন তানোরের পথে যাবেন? পুলিশ এটাও বলছে, নূর ইসলামের কখনও ডোপ টেস্ট করা হয়নি। কারণ মাদক সেবনের মতো কোনো উপসর্গ পুলিশের চোখে পড়েনি আগে। তবে নেশাগ্রস্ত না হলে তিনি এ পথে কেন গভীর রাতে যাবেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে।
রাজশাহীর পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হাসান বলেন, বাগমারায় তিনি দায়িত্বে অবহেলা করে ক্লোজড হয়েছিলেন। তবে মানুষ হিসেবে খুব খারাপ ছিলেন না। কখনও নেশাগ্রস্ত বলেও মনে হয়নি। তবে রাত সোয়া ১২টায় তিনি নিজ কর্মস্থলের পথে না গিয়ে তানোরের পথে কেন যাচ্ছিলেন- তা নিয়ে আমাদের মনেও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাই তার ফোনের কললিস্ট দেখে তদন্ত করা হচ্ছে।
তিনি জানান, নিহত নূর ইসলামের পরিবার ময়নাতদন্ত করতে আপত্তি জানিয়েছিল। তাই ময়নাতদন্ত না করেই লাশ তার পরিবার গ্রামের বাড়ি যশোরে নিয়ে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় সড়ক দুর্ঘটনার আইনে মামলা হয়েছে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়