শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৩ ১৪৩১
|| ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৭ জুন ২০২৩
গত ২ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছে প্রার্থীরা। প্রতীক বরাদ্দের সঙ্গে সঙ্গেই নগরীতে ভোট উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। প্রচারনায় সরব সকল কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তবে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনিত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ছাড়া অন্যদের প্রচারণায় তেমন সরব থাকতে দেখা যায় নি। যা নিয়ে প্রার্থীদের নিজেদের মতো করে কারণ দর্শাচ্ছেন।
মঙ্গলবার (৬ জুন) নগরী ঘুরে দেখা যায়, মেয়র পদে শুধু নৌকারপ্রার্থী লিটনের পোস্টার। একই সাথে নৌকা প্রতীকের কর্মি-সমর্থকরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে নগরীর সর্বত্রই বাড়ি বড়ি গিয়ে প্রচারনা চালাচ্ছেন। এরসঙ্গে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের প্রতীক সংবলিত পোস্টারে ছেঁয়ে গেছে নগরী। কিন্তু মেয়র পদে নতুন তিন মুখের পোস্টার কিংবা ব্যানার কিছুই চোখে পড়ার মতো নেই। নতুন অন্য দুই প্রার্থীর মধ্যে হাতপাখার প্রচারনায় বেশি। যদিও সেটা নৌকার ধারে কাছেও নেই।
৬ জুনও (মঙ্গলবার) নৌকারপ্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ), বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল ও রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে গণসংযোগ ও মতবিনিময় করেছেন।
এদিন বেলা ১২টা থেকে কয়েক ঘণ্টাব্যাপি রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক থেকে গণসংযোগ করেন লিটন। এরপর সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। এসময় রাজশাহীর উন্নয়নের ধারা চলমান রাখতে এবং ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করেন মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এছাড়া গত ২ জুন থেকে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পারছেন তিনি।
মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীতে কর্মের জায়গা খুবই কম। তাই কর্মের জায়গা তৈরি করতে চাই। শিক্ষিত বেকারদের জন্য কিছু করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। রাজশাহীতে শিল্পায়ন ঘটানোর জন্য যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলো তুলে ধরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে শিল্প-কারখানা আনার চেষ্টা করবো।
রাসিকের দুইবারের সাবেক সফল মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমার জন্মস্থান রাজশাহীর ঋণ পরিশোধে রাজশাহীতে থেকে গেছি রাজশাহীর উন্নয়নের জন্য। রাজশাহী সিটির আয়তন ৯৬ বর্গকিলোমিটার থেকে ৩৫০ বর্গকিলোমিটারে সম্প্রসারণ করতে চাই। সম্প্রসারিত এলাকায় উন্নত নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে চাই। ওই এলাকায় জলাবদ্ধতা হবে না, রাস্তা ভাঙ্গা থাকবে না, পার্ক থাকবে, আলোকায়ন হবে, স্কুল থাকবে অর্থাৎ নাগরিক যত সুযোগ-সুবিধা, সবই থাকবে। ভোটাররা সুযোগ দিলে সেই কাজটি করতে চাই। তবে লিটনের অভিযোগ, একটি দল ধর্মের অপব্যাখ্যা করে ধর্মপ্রাণ ভোটারদের জান্নাতের মিথ্যা আশ^াস দিয়ে ভুলপথে টানছে। এদের অপপ্রচার থেকে সাবধান থাকার আহ্বান জানান ভোটারদের।
আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী বাদেও এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিন জন। যারা প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। নির্বাচন নিয়ে তাদেও এখন পর্যন্ত কোনো রুপরেখা নেই। নির্বাচনী ইশতেহারও এখনো তৈরি করতে পারেন নি। এই তিন মেয়রপ্রার্থী হলেন- জাতীয় পার্টির প্রার্থী ‘লাঙ্গল’ প্রতীকে সাইফুল ইসলাম স্বপন, জাকের পার্টির প্রার্থী লতিফ আনোয়ার ‘গোলাপ’ প্রতীক ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুরশিদ আলমের ‘হাতপাখা’।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী ‘লাঙ্গল’ প্রতীকে সাইফুল ইসলাম স্বপনের দাবি ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর পোস্টারে নগরী ছেঁয়ে গেছে। তাই তারা ফাঁক-ফোঁকর খুঁজে পোস্টার মারছেন। একারণে হয়তো তাদের পোস্টার দেখা যাচ্ছে না।
মেয়রপ্রার্থী স্বপন বলেন, নৌকার মতো সরব থাকতে না পারলেও তারা প্রচারণায় আছেন। মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। মানুষকে আশ্বাস দিচ্ছেন। তারা বেকারত্বকে সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে কর্মসংস্থানের আশ্বাস দিচ্ছেন। আর তিনি প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর জনসংযোগ করছেন। তাপদাহের কারণে দিনে নামতে পারছেন না। এই রোদ-গরমে দিনে মাঠে নামাও সম্ভব না। আর গতকাল (সোমবার) থেকেই পোস্টার মারা শুরু করেছি। মাইকিংও হচ্ছে। আর ইশতেহার তৈরি করছি। দু’এক দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবো।
জাকের পার্টির প্রার্থী ‘গোলাপ’ প্রতীকের লতিফ আনোয়ার বলেন, আমরা মাঠে আছি। তবে আমরা পোস্টারিঙের চেয়ে সরাসরি ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে ভোট চাওয়াকে গুরুত্ব দিচ্ছি। তবে ৫ জুন থেকে কিছু পোস্টার লাগাচ্ছি। তবে কেন্দ্রীয় কমিটির একটি প্রোগ্রামের কারণে ঢাকায় ছিলাম। রোববার রাজশাহীতে ফিরেই প্রচারনা শুরু করেছি। ইশতেহার তৈরি হয় নি। তৈরি করেই জানাবো।
‘হাতপাখা’ প্রতীকের ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুরশিদ আলম বলেন, আমরা প্রতিদিনই কড়া রোদের মধ্যেও মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছি। আজও প্রচারনা চালিয়েছি। ভোটারদের ভালো সাড়া আছে। তবে নির্বাচনী ইশতেহারটা এখনো জানানো হয় নি। বুধবারই সাংবাদিক ভাইদের জানাবো। আর একজন প্রার্থী আমাদের নিয়ে যে মিথ্যা অপপ্রচার চলাচ্ছেন, এটা সর্ম্পূণ ভুল। মানুষ এখন শিক্ষিত ও রাজনীতি সচেতন। সবকিছু বোঝে। সুতরাং ধর্মীয় অপব্যাখ্যা করার কোনো সুযোগ নেই। আর আমরা আমাদের পকেটের টাকা খরচ করে নির্বাচন করছি। আমাদের শুভাকাক্সক্ষী আছে। তারাও খরচ করছে। আমরা প্রতিদিন ২০-২৫ জন মিলে জনসংযোগ করছি। এছাড়া পোস্টারিংটা করতে পারি নি। প্রিন্টিংয়ের কাজ চলছে। শেষ হলেই পোস্টার লাগানো শুরু হবে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়