বুধবার ১৫ মে ২০২৪ ||
জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩১
|| ০৭ জ্বিলকদ ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারি ২০২২
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় মো. নুরুজ্জামান নামে এক ব্যক্তির বসতভিটা দখল করতে তাঁর পরিবারকে ‘একঘরে’ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। নুরুজ্জামানের বাড়ি উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের পশুপতিপুর গ্রামে। এ গ্রামেরই মাতব্বর শফিকুল ইসলাম ওরফে হোসেন তাঁকে একঘরে করে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন মো. নুরুজ্জামান।
গ্রামের বাসিন্দারা জানান, শফিকুলের ভয়ে গ্রামের লোকেরা গত বছরের এপ্রিল থেকে নুরুজ্জামানের পরিবারের সঙ্গে মিশতে পারেন না। নুরুজ্জামানের ছেলে হাফেজ মো. গোলাম সারওয়ার পশুপতিপুর জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন। শফিকুল ফতোয়া দিয়েছেন যে, হাফেজ সারওয়ারের পেছনে নামাজ হবে না। সারওয়ারকেও এখন মসজিদে ইমামতি করতে দেওয়া হয় না।
এ বিষয়ে মো. নুরুজ্জামান বলেন, শফিকুল ইসলাম আমাকে গ্রাম থেকে উচ্ছেদ করে পুরো বসতভিটা দখলে নিতে চান। কৌশলে তিনি প্রতিবেশী কয়েকজনকে বুঝিয়েছেন যে, তাঁদের জমি আমার বাড়ির ভেতরে রয়েছে। এ ছাড়া শফিকুল আমার বসতভিটা জোরপূর্বক দখল করে চলাচলের জন্য একটি রাস্তা ও মসজিদ নির্মাণ করেছেন। গ্রামের লোকদের শফিকুল বুঝিয়েছেন যে, আমি মসজিদ ভেঙে দিতে চাই। তাই আমার সঙ্গে মেশা যাবে না। এভাবে কৌশলে আমার পরিবারকে ‘একঘরে’ করে রেখেছেন।
নুরুজ্জামান আরও বলেন, আমার আরেক ছেলে মো. বদিউজ্জামান গত ৩ ডিসেম্বর বাড়ির পাশে নিজের আলাদা বাড়ির কাজ করতে গেলে বাধা দেন শফিকুল ইসলাম। পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিয়ে বাড়ির কাজে হাত দিলে হাত-পা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেন। বাধ্য হয়ে বদিউজ্জামান ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ছাড়া হত্যার হুমকির ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল। তদন্তে পুলিশ এর সত্যতা পেয়েছে।
নুরুজ্জামানের ছেলে হাফেজ মো. গোলাম সারওয়ার বলেন, ‘আমার পেছনে নামাজ হবে না এমন ফতোয়া দিয়ে শফিকুল গত রমজান মাসে আমাকে মসজিদ থেকে বের করে দেন। তারপর থেকে তিনি গ্রামের কোনো মানুষকে আমাদের পরিবারের সঙ্গে মিশতে দেন না। শফিকুল কলেজের শিক্ষক ছিলেন বলে সবাই তাঁর কথা শোনেন। আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। আমাদের হয়তো ভিটেমাটি ছেড়ে চলেই যেতে হবে।’
পরিবারটিকে একঘরে করে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম বলেন, এটা তো সামাজিক ব্যাপার। আমার একক ক্ষমতা আছে নাকি?
কেন একঘরে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মসজিদ নিয়ে একটা বিবাদ আছে। নুরুজ্জামান তাঁর ছেলেদের নিয়ে মসজিদ চালানোর চেষ্টা করেছিল। সর্বসাধারণ বসে তাঁদের বাতিল করে মসজিদ চালাচ্ছেন। তাঁদের হীন উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি বলে এসব কথা বলে বেড়াচ্ছে। বসতভিটা দখল কিংবা চাঁদা দাবির অভিযোগ সত্য নয়।
মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জামাল উদ্দিন বিষয়গুলো জানেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মসজিদ নিয়ে গ্রামের মানুষদের সঙ্গে নুরুজ্জামানের দ্বন্দ্ব আছে। মানুষ চলাচলের জন্য নুরুজ্জামানের একটু জায়গাও চায়। আমিও একটু জায়গা দেওয়ার জন্য বলেছি। কিন্তু তাঁরা দেয়নি। নুরুজ্জামানের ছেলে গ্রামবাসীর ওপরে মামলা করেছেন। এ কারণে সবাই ক্ষিপ্ত। তাই এ রকম জটিলতা শুরু হয়েছে। তাঁরা ইউনিয়ন পরিষদে একটা অভিযোগও দিয়েছেন। তারিখ পড়লে বিষয়টা দেখা হবে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়