শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৩ ১৪৩১
|| ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০২০
পদ্মার পানি বাড়ার সাথে সাথে চারঘাট উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। উজান থেকে বেয়ে আসা পানি ও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে পদ্মা নদীর পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।
এতে নদী এলাকার গোপালপুর, পিরোজপুর, রাওথা, চন্দনশহর, ইউসুফপুর, টাঙ্গনসহ এলাকার মানুষের আতঙ্কে রাতে ঘুমাতে পারছে না।
নদী ভাংগনের কবলে পড়ে নদী তীরবতী এলাকায় অনেক মানুষ বাড়িঘর সহায় সম্বল এমনকি ভিটে মাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। সর্বনাশা পদ্মার করাল গ্রাসে প্রতিবছর ভিটে মাটি হারিয়ে অনেকে হচ্ছে গৃহহীন ও ভুমিহীন।
এবছর পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙ্গন প্রকট হলে উপজেলার পদ্মার তীরবর্তী এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম হুমকীর মুখে পড়বে। আরও হুমকির মুখে পড়বে টাঙ্গনের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাওথার একটি মসজিদ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইউসুফপুর ইউনিয়নের টাঙ্গন ও রাওথা গ্রামের নদীতীরবর্তী এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়ে গেছে। টাঙ্গন এলাকার নদী তীরবর্তী বাসিন্দা মকবুল ও মনির বলেন আমরা চরম আতঙ্ক’র মধ্যে আছি, কখন জানি নদীর পানির জোয়ারে বাধ ভেঙ্গে বাড়ীঘর নদী গর্ভে চলে যায়।
মারুফা জানায় গত কয়েকবছর ধরে প্রতি বর্ষায় আমার বাড়ির জমির কয়েক ফুট করে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
রাওথার দত্তপাড়া গ্রামের আব্দুস সালামের স্ত্রী মনোয়ারা ও জামালের স্ত্রী মজিফা বলেন, আমাদের বাড়িটি নদীতীর হইতে মাত্র কয়েক ফুট দুরে অবস্থিত। ইতিমধ্যে বৃষ্টি ও উজানের পানিতে নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। নদীর তীর ব্লক দিয়ে পাঁকা বাধ না বাধলে হয়তো আমাদের বাড়ি রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, চারঘাট সীমানায় পদ্মার প্রায় ২০ কি:মি: দীর্ঘ তীরবর্তী এলাকা রয়েছে যার অধিকাংশ তীরবর্তী জায়গায় মানুষ বসবাস করে। এই তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৮ কি:মি: নদীতীরবর্তী এলাকা ব্লক দিয়ে পাঁকা বাধ দেয়া আছে এবং বাকি তীরবর্তী এলাকা অরক্ষিত বা কাঁচাবাধ।
কোন কোন সময় বাধ ভাঙ্গন ধরলে বালু ভর্তি জিওবি ব্যাগ দিয়ে সাময়িকভাবে কাচাঁ বাধ রক্ষার জন্য চেষ্টা করা হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে বাধ রক্ষায় তা অকার্যকর।
নদী তীরবর্তী স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন বর্ষা মৌসুমের পানি বৃদ্ধির সময় বাধ ভাঙ্গন বা ফাটল ধরলে প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পাকা বাধ তৈরি আশ্বাস দিলেও পাকা বাধ নির্মানের জন্য কোন উদ্যোগ দেখা যায় না।
এবিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মো: গোলাম মোস্তফা বলেন, নদী তীরবর্তী মানুষদের রক্ষার্থে নকশার কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে বাঁধের কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশা করেন। এই প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গনে ৮ শত মিটার ও রাওথায় ৭শত মিটার পাকা বাঁধ তৈরি করা হবে।
নদীর বাধ নির্মান প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সামিরা বলেন, আমি ইতিমধ্যে টাঙ্গন ও রাওথায় পদ্মা নদীতীরবর্তী এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি।
কিছু কিছু জায়গায় কাচাঁ বাধ ফাটল দেখা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগীতায় জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে জিওবি ব্যাগ ফেলে সাময়িকভাবে ফাটল বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে সকল স্থানে পাকাঁ বাধ নেই খুব দ্রুত বাধ নির্মান প্রক্রিয়া শুরু হবে যেন নদীতীরবর্তী আর কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়