শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৩ ১৪৩১
|| ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৭ জুন ২০২৩
প্রতিবার নির্বাচনে প্রচন্ড ব্যস্ত সময় কাটাতে হয় ছাপাখানার কর্মীদের। কিন্তু এবারের চিত্রটা দেখা গেছে ভিন্ন। প্রচারণার পাঁচদিন পার হয়ে গেলেও তেমন ব্যস্ততা নেই ছাপাখানা কর্মীদের মাঝে। ছাপাখানার মালিকরা বলছেন, আগের নির্বাচনে ব্যবসা ভালো হলেও এবার তা হচ্ছে না। প্রার্থীরা গত নির্বাচনের মতো পোস্টারের চাহিদাও দেখাচ্ছেন না। তবে এইবার ভালোা ব্যবসা করছেন ডিজিটাল সাইন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, প্লাস্টিক পিভিসি হওয়াতে আগ্রহ বাড়ছে প্রার্থীদের, তাই তারা ছাপাচ্ছেনও অনেক।
নগরীর হকার্স মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, আগের নিবার্চনগুলোতে ছাপাখানাগুলোতে অবিরাম চলতো মুদ্রণযন্ত্র। কর্মিদের নিঃশ্বাস নেয়ার সময় থাকতো না। দিনরাত চলতো পোস্টার ও লিফলেট তৈরির কাজ। কিন্তু এখন আর আগের মতো সেই কাজ নেই।
রাজশাহী নগরীর প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় ছেয়ে গেছে মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামার লিটনের পোস্টার ও ফেস্টুনে। তবে অন্য তিন প্রার্থীর কোনো পোস্টার ও ফেস্টুন চোখে পড়েনি। রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে চারজন ছাড়াও ১০টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৪৬ এবং ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ১১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ২১ জুন ইভিএমে অনুষ্ঠিত হবে ভোট। প্রার্থীরা আটঘাট বেঁধে প্রচারে নেমেছেন।
বাংলাদেশ মুদ্রণশিল্প মালিক সমিতির রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক স্বাগতম নস্কর বলেন, প্রতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৮ থেকে ১০ রিম কাগজের পোস্টার ছাপানো হয়। প্রচারণার পাঁচদিনেও এক রিমও শেষ হয়নি। আগের নির্বাচনগুলোতে খাওয়ার সময় পাওয়া যেত না। দিনরাত কাজ চলতো। কিন্তু এবার তা উল্টো হয়েছে। প্রতিদিনের মতো ছাপাখানা খোলা ও বন্ধ হয়। এবার প্রার্থীরা লিফলেট নিচ্ছে বেশি। তাও চাহিদার চেয়ে অনেক কম।
তিনি আরও বলেন, সবকিছুর দাম বেড়েছে। কাগজ, কালির দাম বেড়ে কয়েকগুন। প্রতি পোস্টার ছাপাতে খরচ পড়ছে চার টাকা করে। আর আগের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতি পোস্টারে খরচ হয়েছিল দুই টাকা। যে প্রার্থী যত পোস্টার নেন খরচ কম পড়ে।
ছাপাখানায় ব্যবসা না থাকলেও ফেস্টুনের দিকে বেশি চাহিদা প্রার্থীদের। নগরীর অ্যাকটিভ ডিজিটাল সাইনের সত্ত্বাধিকারী ইব্রাহিম হোসেন বাবু বলেন, এবারের নির্বাচনে প্রার্থীরা ডিজিটাল ব্যানার ফেস্টুন বানাচ্ছেন বেশি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পিভিসিগুলো তৈরি হয় প্লাস্টিক থেকে। বৃষ্টি বা ঝড়ে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। দড়ি ছিড়ে গেলে সেই পোস্টার নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু পিভিসির তৈরি ডিজিটাল ফেস্টুন কাঠের ফ্রেমে তৈরি হয় বলে খুলে যাওয়ার ভয় নেই।
তিনি বলেন, সময়ের সাথে সাথে এই ব্যবসা এখন প্রতিযোগিতামূলক হয়ে গেছে। যে যত কম দামে পারছে পিভিসি দিয়ে ফেস্টুন তৈরি করে দিচ্ছে। তবে ব্যবসা ভালোই, জমজমাট। প্রতি স্কয়ার ফুটে ১৪ থেকে ১৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
ফড়িং ডিজিটাল অ্যাড ফার্মের সত্ত্বাধিকারী আবদুস সাত্তার বলেন, গতবারের চেয়ে এবারের অর্ডার বেশি হচ্ছে। প্রার্থীরাও ডিজিটাল প্রিন্টের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। তাই এবার ব্যবসা ভালোই চলছে।
বাংলাদেশ মুদ্রণশিল্প মালিক সমিতির সভাপতি বেলাল আহমেদ বলেন, নির্বাচন আসলেই ছাপাখানায় খুশির আমেজ থাকতো। এবারের নির্বাচনে সেটা আর নেই। যা অর্ডার আসছে খুব টুকটাক। বড় পোস্টার বানাতে চাচ্ছেন না প্রার্থীরা। আর বানালেও বৃষ্টির ভয়ে পলি দিয়ে মুড়িয়ে দিতে হচ্ছে। লিফলেটে আগ্রহ আছে প্রার্থীদের। লিফলেটও বেশি বানানো হচ্ছে। তবে এবারের নির্বাচনে ব্যবসা খুব খারাপ যাচ্ছে। অনেক ছাপাখানা অর্ডার নিচ্ছে না। আবার অনেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ নিয়ে ব্যস্ত।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়