শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১২ ১৪৩১
|| ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
প্রকাশিত: ১৩ জুলাই ২০২০
চট্টগ্রাম বন্দরে ট্রানজিট সুবিধা পাচ্ছে ভারত। করোনা পরিস্থিতিতে নিজেদের পণ্য হ্যান্ডলিং নিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে শুরু হচ্ছে ভারতীয় পণ্য খালাস ও পরিবহন। ভারতীয় পণ্যবাহী কন্টেইনার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সড়কপথে সরাসরি তাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পরিবহন করা হবে। বিশেষ এসকর্ট দিয়ে পণ্যবাহী কন্টেইনার বাংলাদেশের দীর্ঘ মহাসড়কপথ ব্যবহার করে বিবিরবাজার-শ্রীমান্তপুর ও আখাউড়া-আগরতলা হয়ে ভারতে নেওয়া হবে। ‘ট্রায়াল রান’ বা পরীক্ষামূলক চলাচলের জন্য প্রথম দফায় ভারত থেকে পণ্যবাহী চারটি কন্টেইনার আসছে। এসব কন্টেইনার আনতে ইতোমধ্যে কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দরের (সাবেক কলকাতা বন্দর) উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে গেছে ‘এমভি সেঁজুতি’ নামে একটি বেসরকারি মালিকানাধীন জাহাজ। ওই জাহাজটি ভারতীয় পণ্য নিয়ে ফেরত আসা সাপেক্ষে আগামী বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার প্রথম ‘ট্রায়াল রান’ হতে পারে। প্রথম ট্রায়াল রান হিসাবে বাংলাদেশের সড়ক বিভাগ তাদের প্রশাসনিক ফি মওকুফ করে দিয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক গতকাল রোববার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, প্রথম দফায় ওই জাহাজটিতে ট্রানজিটের পণ্যবাহী চারটি কন্টেইনার আসবে। দুটি কন্টেইনারে স্টিল সামগ্রী ও দুটিতে গম আনার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সোমবার কলকাতা বন্দর থেকে জাহাজটি রওনা দেওয়ার কথা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম ইনকিলাবকে বলেন, এ বিষয়ে আমরা এখনও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চ‚ড়ান্ত কোন নির্দেশনা পাইনি। প্রাথমিকভাবে যেটা বলা হয়েছে এসব পণ্যের কোন শুল্ক দেওয়া হবে না। কারণ এসব পণ্য ভারতের এক অংশ থেকে অন্য অংশে যাবে। তবে নিয়ম অনুযায়ী কিছু চার্জ আদায় করা হবে।
বিগত ২০১৮ সালের অক্টোবরে দিল্লিতে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যেগুলোতে পণ্য সরবরাহ করতে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়। সচিব পর্যায়ে ওই চুক্তির এক বছর পর ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে এ সংক্রান্ত পরিচালন পদ্ধতির মান বা এসওপি সাক্ষর হয়। তবে মাশুল নির্ধারণে অস্পষ্টতা ও জটিলতার কারণে পরীক্ষামূলক পণ্য পরিবহন করা হয়নি। গত মার্চে ট্রায়াল রান হওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশের প্রস্তুতি না থাকা এবং করোনাভাইরাসের কারণে সেটি পিছিয়ে যায়।
কাস্টম কর্তৃপক্ষ কোন শুল্ক আদায় না করলেও সাত ধরনের মাশুল আদায় করবে। এগুলো হলে চালানের প্রসেসিং মাশুল ৩০ টাকা, প্রতিটনের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট মাশুল ২০ টাকা, নিরাপত্তা মাশুল ১০০ টাকা, এসকর্ট মাশুল ৫০ টাকা এবং অন্যান্য প্রশাসনিক মাশুল ১০০ টাকা। এর বাইরে প্রতি কন্টেইনার স্ক্যানিংয়ের জন্য ২৫৪ টাকা এবং বিধি অনুযায়ী ইলেকট্রিক সিলের মাশুল প্রযোজ্য হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে ভারত থেকে ট্রানজিটের কন্টেইনার আসা শুরু হলেও এখনও অনেক প্রস্তুতি শেষ হয়নি। বিশেষ করে কন্টেইনারে ইলেকট্রিক সিল লাগানোসহ অনেক কাজ এখনও বাকি। তাছাড়া করোনা পরিস্থিতি বন্দরের নিজস্ব মালামাল হ্যান্ডলিংয়ে ব্যস্ত চট্টগ্রাম বন্দর। কিভাবে কি করতে হবে সে বিষয়ে তেমন সুস্পষ্ট নির্দেশনা আসেনি।
প্রথম ট্রায়াল রান পরিচালনা হবে ম্যাঙ্গো লাইন লিমিটেডের জাহাজে। তাদের জাহাজ এমভি সেঁজুতি চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) ১ নম্বর জেটি থেকে রফতানি পণ্যভর্তি ও খালি ১৫৫ টিইইউস কন্টেইনার (২০ ফুট হিসেবে) নিয়ে শনিবার কলকাতার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। আজ সোমবার জাহাজটি কলকাতা বন্দর থেকে অন্য কন্টেইনারের পাশাপাশি ৪ কন্টইনার ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের উপক‚লীয় এলাকায় চলাচলকারী ৯৫ মিটার লম্বা এ জাহাজে ৩৭২ টিইইউস কন্টেইনার পরিবহন করার সক্ষমতা রয়েছে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়