শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৩ ১৪৩১
|| ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ২৪ জুলাই ২০২২
উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জেদে ৫০ বছর বয়সে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। এরপর উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়ার পর ৫৫ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি শুরু করেন।
এরই মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসছেন তিনি। আগামী ২৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের প্রথম শিফটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন তিনি। জ্ঞান পিপাসু ও অদম্য ইচ্ছা শক্তির অধিকারী ব্যক্তির নাম বেলায়েত শেখ। তার বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায়। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে আছে। বিবাহিত বড় ছেলে ব্যবসা করছেন। ছোট ছেলে শ্রীপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। বড় ছেলের স্ত্রীও পড়ছেন একাদশ শ্রেণিতে। এছাড়া তিনি দৈনিক করতোয়া পত্রিকার শ্রীপুর উপজেলা প্রতিনিধি।
বেলায়েত শেখ জানান, ১৯৬৮ সালে জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ ডিগ্রি নেওয়ার। অভাবের সংসারে বাবার অসুস্থতার কারণে ১৯৮৩ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেননি। অসুস্থ মা-বাবা ও ভাইবোনদের ভরণপোষণ করতে সংসারের হাল ধরেন তিনি। জীবন চালাতে দিনমজুর, হোটেল বয়, গ্যারেজের টুকিটাকি কাজ করেছেন। পরে ছোট একটি মোটর মেরামতের ওয়ার্কশপের আয় দিয়েই চলতো সংসার।
বাবা-মা’র সেবার জন্য অল্প বয়সেই বিয়ে করেন। সংসার জীবনে তিন সন্তানের বাবা তিনি। সংসারের ঘানি টেনেও আরও দুবার এসএসসি পরীক্ষার প্রস্ততি নেন। অভাবের কারণে পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। নিজের ভাই-বোনদের মধ্যে কেউ সেভাবে উচ্চ শিক্ষা পায়নি। সেই আক্ষেপ থেকে পুনরায় লেখাপড়া শুরু করেন তিনি। দীর্ঘ তিন যুগ পর ২০১৯ সালে কারিগরি শাখা থেকে জিপিএ ৪.৪৩ পেয়ে এসএসসি এবং ২০২১ সালে ছোট ছেলের সঙ্গে জিপিএ ৪.৫৮ পেয়ে এইচএসসি পাশ করেন।
এই বয়স এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুরুতে মনে হতো আমি তরুণদের মতো নই। শুরুতে খুব একটা ভালো লাগতো না। বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে হাসির পাত্র হয়েছি। তবে আমার ইচ্ছা শক্তি কখনো দুর্বল হয়নি। ফলে কিছুদিনের মধ্যে বেশির ভাগ সিচুয়েশন স্বাভাবিক হয় ফলে প্রস্তুতি নিতে পরবর্তীতে আর অসুবিধা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি কোচিংয়ের গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা শাখায় ভর্তি হই। গত মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেই। কিন্তু পাশ করতে পারিনি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বয়সের কারণে আগে থেকেই অবহিত করেছিলেন ভর্তি হতে পারবো না। সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত থাকায় তিনি একই বিভাগে পড়াশোনার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, আমি সংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িত তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগে সুযোগ হলে পড়তে চাই। এই বিভাগে পড়ে আমার ক্যারিয়ারও আরও ভালো করে গড়তে চাই।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়