শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৫ ১৪৩১
|| ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২৩
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র জেলার মধ্যে সেবায় সেরা হয়েছে। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুল ইসলাম উপজেলায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন। ২০২২ সালে পরিস্কার পরিছন্নতা ও সার্বিক বিষয়ে সেবা প্রদান করায় এ সফলতা অর্জন করেন।
জানা যায়, করোনা সংক্রমণ শুরুর পর একের পর এক নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের কোভিড রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া স্বাস্থ্যসেবায় বিশেষ অবদান রাখায় উপজেলায় প্রথম হয়ে পুরস্কার অর্জন করেছেন শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুল ইসলাম।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুল ইসলাম ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। তারপর সেবারমান বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। তার নিজের অর্থায়নে শিশুদের যাবতীয় খেলনা সামগ্রী রেখেছেন। তিনি শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী দেখেন। তিনি প্রথম পর্যায়ে প্রতিদিন ১০০-১৫০ বর্তমানে ২৫০-৩০০ জন রোগীকে সেবা দিচ্ছেন। আধুনিক যন্ত্রপাতিসমৃদ্ধ একটি অপারেশন থিয়েটারসহ ১৯৯৩ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপন করা হয়।
২০০৮ সালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহিরয়ার আলম এমপির প্রচেষ্টায় ৫০ শয্যায় উন্নীত করে দ্বিতীয় তলায় স্বয়ংক্রিয় আধুনিক অপারেশন থিয়েটার স্থাপন করা হয়। আধুনিক মানের দুটি অপারেশন থিয়েটার ও যন্ত্রপাতি দিয়ে ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর ২৯ বছর পর অস্ত্রপচারের মাধ্যমে অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম চালু করা হয়।
অপারেশন থিয়েটার চালু করায় উপজেলার শত শত প্রসূতি মায়েরা বিনামূল্যে নরমাল ও সিজারিয়ান ডেলিভারির সুবিধা পাচ্ছেন। এতে প্রসূতি মায়েদের প্রসব পূর্ববর্তী, প্রসবকালীন ও প্রসব পরবর্তী গাইনি সার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করা হচ্ছে।
ডা. আসাদুল ইসলাম ১৯৯৪ সালে এসএসসি ও ১৯৯৬ সালে এইচএসসি এবং ২০০৫ সালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস সম্পূন্ন করেন। প্রথমে তিনি ২০০৬ সালে বিবিএস সম্পূন্ন করে নওগাঁ মেডিকেলে যোগদান করেন। ২০০৯ সালে বগুড়া মেডিকেলে শিশু রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন। ২০০১ সালে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।
২০১৮ সালে আমেরিকার বোস্টন মেডিকেল থেকে কোর্স সম্পূন্ন করে পরে রাজশাহী মেডিকেলে শিশু চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করেন। এখান থেকে তিনি বদলি হয়ে ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল শিশু বিশেষজ্ঞ হিসেবে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। তারা তিন বোন ও দুই ভাই। এরমধ্যে দুই বোন সিনিয়ার স্টাফ নার্স, এক ভাই সৌদি আরব প্রবাসী, আরেক বোন গৃহিণী। তার বাবার ২০১১ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুল ইসলাম বলেন, রোগীরা সেবা পেতে যেন ভাগান্তি না হয়, সেজন্য চেম্বারে মোবাইল ফোন টানিয়ে রাখা হয়েছে। রাত-দিন পরিচিত হোক আর অপরিচিত হোক, রোগীর কথা শুনে পরামর্শ দেয়া হয়। রোগীর সেবা নিশ্চিত করতে সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নির্ধারিত সময় থেকে আউটডোরে চিকিৎসা দেওয়া হয়। টিএইচএ ডা. আসাদুজ্জামান প্রতিদিন বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ফুলের বাগান করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। টিএইচএ তার অফিসে বসে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেন। মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত হচ্ছে। তাই এবার সেরার পুরস্কার পেয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
এ বিষয়ে টিএইচএ ডা. আসাদুজ্জামান বলেন, আগে কখনো সেরার তালিকায় স্থান পায়নি। এবার প্রথম সেরা হয়েছে। এ অর্জন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রতিটি সদস্যের। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সেবা নিশ্চিত হচ্ছে। ছোটখাটো কিছু সমস্যার সমাধান হলে সেবার মান আরও বাড়বে। জনগণ যাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাক্সিক্ষত সেবা পায়, সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়