ব্রেকিং:
সড়ক দুর্ঘটনায় এনজিওর এক মহিলা কর্মী আহত হয়েছে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে ট্রাম্প-পাকিস্তান সেনাপ্রধানের বৈঠক তবু আপন কর্তব্যে অবিচল সেনাবাহিনী "তারেক-খালেদাকে ‘খুনি’ বলা রফিক কালের কণ্ঠেই টিউলিপসহ রাজউকের ৯ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব তলব করোনায় আরও ২ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৮ রাজশাহী মহানগরীতে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার ১৩ জন তানোরে ভুয়া এনজিওর নামে ৩৪ লাখ টাকার প্রতারণা মামলা বিধবা নারীকে পেটানোর অভিযোগ সেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে
  • শনিবার   ১২ জুলাই ২০২৫ ||

  • আষাঢ় ২৭ ১৪৩২

  • || ১৬ মুহররম ১৪৪৭

আমার রাজশাহী
সর্বশেষ:
সড়ক দুর্ঘটনায় এনজিওর এক মহিলা কর্মী আহত হয়েছে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে ট্রাম্প-পাকিস্তান সেনাপ্রধানের বৈঠক তবু আপন কর্তব্যে অবিচল সেনাবাহিনী "তারেক-খালেদাকে ‘খুনি’ বলা রফিক কালের কণ্ঠেই টিউলিপসহ রাজউকের ৯ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব তলব করোনায় আরও ২ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৮ রাজশাহী মহানগরীতে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার ১৩ জন তানোরে ভুয়া এনজিওর নামে ৩৪ লাখ টাকার প্রতারণা মামলা বিধবা নারীকে পেটানোর অভিযোগ সেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে
২৩

তিন মাসের কমিটিতেই ছয় বছর পার রাজশাহী জেলা বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০২৫  

তিন মাসের জন্য গঠিত হয়েছিল রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। সেই কমিটিই পার করেছে ছয় বছর। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের আশ্বাস দিয়ে ২০১৯ সালের ৪ জুলাই অনুমোদন হওয়া কমিটিকে ঘিরে এখন শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়। সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলছেন, দীর্ঘ সময়েও সম্মেলন করতে না পারা নেতৃবৃন্দের সাংগঠনিক ব্যর্থতারই প্রমাণ।

গত ৫ জুলাই কমিটির ছয় বছর পূর্তিতে সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন নিজের ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, “আলহামদুলিল্লাহ। রাজশাহী জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ৬ বছর পূর্ণ হলো!” -এই পোস্টের মন্তব্যেই শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। নেতাকর্মীদের একাংশ মন্তব্য করেন, ছয় বছরে জেলা কমিটির কার্যক্রম ‘মৃতপ্রায়’ হয়ে পড়েছে।

দলীয় সূত্র বলছে, ২০১৯ সালের ৪ জুলাই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষর করে কমিটি অনুমোদন করেন। তবে তা প্রকাশ করা হয় পরের দিন ৫ জুলাই। কেন্দ্রীয় বিএনপি আবু সাঈদ চাঁদকে আহ্বায়ক এবং বিশ্বনাথ সরকার বাবুকে সদস্য সচিব করে ৪১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে। মেয়াদ ছিল মাত্র তিন মাস। তবে সেই কমিটি দীর্ঘ ছয় বছর পার করেও ২৩টি সাংগঠনিক ইউনিটের অধিকাংশে সম্মেলন সম্পন্ন করতে পারেনি।

নেতাকর্মীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে কমিটি কার্যত নিষ্ক্রিয়। লবিং-গ্রুপিং, আত্মীয়প্রীতি ও ব্যক্তিস্বার্থে দলীয় কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। আন্দোলনের সময় অনেকেই মাঠে ছিলেন না, আবার অনেকেই ফেসবুকেই নেতাগিরি চালাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন তারা।

জেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার রহমান ভুট্টু লিখেছেন, “আজ ৫ জুলাই। ২০১৯ সালের এই দিনে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঢাকা থেকে আরোপ করা হয়েছিল। মেয়াদ ছিল মাত্র ৩ মাস, পেরিয়ে গেছে ৭২ মাস। অথচ জেলার ২৩টি ইউনিটের একটিতেও সম্মেলন হয়নি। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো কার্যত কোমায় চলে গেছে।”

তার পোস্টে মন্তব্য করে বিড়ালদহের কর্মী জাহিদ নয়ন লেখেন, “রাজশাহী জেলা বিএনপি মৃতপ্রায় বৃক্ষ, যার শিকড়ে পানি নেই, পত্রপল্লবে প্রাণ নেই। ৬ বছরের নিষ্ক্রিয়তা রাজনৈতিক আত্মহত্যা।”

জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আবু সায়েম রাজিব লিখেছেন, “যিনি ২০০০ সালে নেত্রীর গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে ব্ল্যাকমেইল করেছিলেন, আমাদেরও এখন শুয়ে পড়া ছাড়া উপায় নেই।”

একইভাবে মেহেদি হাসান প্রিন্স মন্তব্য করেন, “রাজশাহী জেলা বিএনপিকে আইসিইউতে পাঠিয়েছে এই কমিটি। অশিক্ষা, স্বেচ্ছাচারিতা আর স্বজনপ্রীতি আজ এর রন্ধ্রে রন্ধ্রে।”

মনোয়ার হোসেন নামের আরেক কর্মী লিখেছেন, “একই নেতৃত্ব দীর্ঘ সময় বহাল থাকলে দলের স্থবিরতা বাড়ে। আস্থা নষ্ট হয়। নতুন কমিটির সময় এখনই।”

জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আহবায়ক কমিটির ৯ নম্বর সদস্য অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন তপু বলেন,

“কমিটি গঠনের সময় কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত ছিল, তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে হবে। ছয় বছরে তা হয়নি। বর্তমান নেতৃত্ব ব্যর্থ। এমন নেতৃত্ব চাই যারা পরবর্তী নির্বাচনে রাজশাহীর ছয়টি আসনে ভূমিকা রাখতে পারবে।”

জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল বলেন, “একসময় ২৩টি ইউনিটে দুই হাজারের বেশি নেতা ছিলেন, এখন মাত্র ১২৩ জনও নেই। সবাই সাবেক। সম্মেলন ছাড়া গতি ফেরানো যাবে না।”

তিনি দলের হাইকমান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করুন। না হলে রাজশাহী বিএনপির অবস্থা আরও খারাপ হবে।”

বিষয়টি নিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, “কমিটির মেয়াদ তিন মাস নির্ধারিত ছিল না। এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় নেতারা নেবেন।”

তিনি আরও দাবি করেন, “জেলার অধিকাংশ ইউনিটে আমরা কমিটি দিয়েছি। যারা বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট দিচ্ছেন, তারা আসলে আন্দোলনের সময় মাঠে ছিলেন না। আমরা হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে রাজশাহীতে বড় ভূমিকা রেখেছি।”

তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে কোনো কোন্দল নেই। নেতারা কোনো অন্যায় কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত নন। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দলের জন্য কাজ করছি।”

বিএনপির কেন্দ্র্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) সৈয়দ শাহীন শওকত বলেন, ‘‘জেলার যে কয়টি ইউনিট কমিটির সম্মেলন এখনো বাকি আছে সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করে জেলার সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই সম্মেলনের মাধ্যমে জেলার পুর্নাঙ্গ কমিটি হবে।’’

আমার রাজশাহী
আমার রাজশাহী
নগর জুড়ে বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর