বৃহস্পতিবার ৩০ মার্চ ২০২৩ ||
চৈত্র ১৫ ১৪২৯
|| ০৮ রমজান ১৪৪৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৫ মার্চ ২০২৩
পরিবারের এক মাত্র ছেলে সাহেব আলী। জন্মের পরে বাবা স্বপ্ন ছিল ঘোড়ার গাড়িতে বর সাজিয়ে ছেলেকে বধূ বরণ করাবেন। কিন্তু বাবা ওসমান আলীর সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তাই বাবার স্বপ্ন পূরণে মা ফুলি বেগম বধূকে বরণ করতে ছেলেকে পাঠান ঘোড়ার গাড়িতে বধূ বরণ করাতে।
গত শুক্রবার (৩ মার্চ ) বিকেলে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার কিসমত গণকৈড় ইউনিয়নের নিজ গ্রাম উজানখলসী থেকে ঘোড়ার বাহনে চড়ে ১৮ কিলোমিটার দুরে একই উপজেলার সায়বাড় গ্রামের সাইদুর মোল্লার মেয়েকে সাদিয়াকে বিয়ে করতে যান বর সাহেব আলী।
প্রাচীন ঐতিহ্য ঘোড়ার গাড়িতে করে বর যাবে কণে নিতে। এতে আনন্দঘন পরিবেশে সৃষ্টি হবে। আর আতœীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা শামিল হবেন সেই বিয়েতে। বাবার স্বপ্ন পূরনে মায়ের ইচ্ছা মেটানোর জন্যই মা ফুলি বেগমের ছেলে সাহেব আলী বরযাত্রীসহ ঘোড়ার গাড়ি চড়ে বিয়ে করতে গেলেন। শুক্রবার বিকালে ঘোড়ার গাড়ির মালিক আবু বকর দুর্গাপুর সদর বাজার হয়ে ঘোড়ার গাড়িতে করে বরযাত্রী নিয়ে যান।
ঘোড়ার গাড়ির কত টাকা ভাড়া নিবে জানতে চাইলে আবু বকর বলেন, শখের বিয়ে। ভাড়ার তেমন চুক্তি নেই। এমন বিয়ে, খুশি হয়ে বেশি করে দিবেন। তাই মেনে নিব। ঘোড়ার গাড়ি থামানোর সাথে সাথে স্থানীয় নারী-পুরুষ,ছেলে-মেয়ে, বৃদ্ধ, শিশুসহ সকলেই ঘোড়ার গাড়ি একনজর দেখার জন্য ভিড় জমান, উৎসুক পথচারীও বাদ যায়নি ঘোড়ার বাহন দেখা থেকে। মুহূর্তেই ভিড় জমে যায় সেখানে।
সাহেব আলীর মা ফুলি বেগম বলেন, আমার ছেলের বাবা অনেক আগেই মারা গেছেন। সে অনার্স মাষ্টার্স পাস করেছে। তার বাবা ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতো । তার স্বপ্নই আমি বুকে ধারন করেছি।আমি মা হয়ে ছেলেকে নিয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণে কাজ করেছি। ছেলে যখন ছোট ছিল, তখন থেকে স্বপ্ন দেখতাম, ঘোড়ার গাড়িতে বিয়ে করতে যাবে ছেলে। আজ তাঁর সেই ইচ্ছা ছেলে পূরণ করেছে। তিনি খুবই খুশি হয়েছেন।
ঘোড়ার গাড়ি কেন জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, আমরা ছোটবেলায় ঘোড়ার গাড়িতে বিয়ে দেখেছি। কিন্ত এখন এমন বিয়ে দেখা যায় না। তার বাবার স্বপ্নের সারথি হয়ে ছেলে সাহেব আলীকে সাহেবের মত ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বিয়ে করতে পাঠাব। ব্যতিক্রম এই বিয়ের আয়োজন দেখতে আসা উপজেলা মোড়ের মোবাইলের রিচার্জ ব্যবসায়ী আফাজ উদ্দিন বলেন, ছোট বেলায় দেখতাম গরুর গাড়ি ও ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে মানুষ বিয়ে করতে যেতো। কালের গর্ভে সেটি হারিয়ে গেছে। আজ হঠাৎ ঘোড়ার গাড়িতে বরযাত্রী দেখে খুবই ভাল লাগলো।
সাহেব আলী বন্ধু সাহাবুর রহমান জানান, আমরা বন্ধুর বিয়েতে অনেক আনন্দন পেয়েছি। আমাদেও প্রজ¥ম তো ঘোড়ার গাড়ীতে করে বিয়ে করতে যাওয়ার ব্যাপারটা তো স্বপ্নের মতো। কিন্তু বন্ধু সাহেব আলীর বিয়ের দাওয়াত পাওয়ার পরে বিয়েতে এতে এমন আয়োজনে আমরা মুগ্ধ। তবে সত্যিই ঐতিহ্য যে গ্রামীন জীবনে আনন্দন বয়ে আনে তার এটি একটি প্রমান।
চাচাতো বড় ভাই কামরুল ইসলাম বলেন, আমার চাচার ,স্বপ্ন পূরনে আমরা ছোট ভাই সাহেব আলীর বিয়ে ব্যবস্থা ঘোড়ার গাড়িতে করি। আমরা র্দীঘ সময় ধরে ঘোড়ার গাড়ির মালিক বকর আলরি সাথে যোগাযোগ করেছি। এমনকি গাড়িটি বেশ কয়েক দিন আগে থেকে বিয়ের জন্য মেরামত করা হয়। এমনকি ঘোড়ার গাড়িটি সুন্দও কওে আমরা সাজিয়ে নিয়েছি।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়